শুক্রবার, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ৩৭ লাখ টাকা নিয়ে উধাও, তদন্তে সিআইডি

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

যশোরের শার্শা উপজেলা ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ এর অনিয়ম দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছেন মাঠ পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।

মাঠ পরিদর্শক আরিফুজ্জামান শার্শা ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের’ ১৭টি সমিতির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। সমিতির সদস্যদের ঋণ দেওয়া, ঋণের কিস্তি নিয়মিত আদায় করা ছিল তার মূল দায়িত্ব। অল্পদিনের মধ্যে সমিতির সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা, মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে বিশ্বস্ততা তৈরি করে ফেলেন মাঠ পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। এর ফলে ১৭টি সমিতির প্রায় ৮০ ভাগ গ্রাহকের ঋণ গ্রহণের পাশ বই আরিফুজ্জামান কৌশলে তার কাছে রেখে দেন।

গ্রাহকরা বইয়ের কথা বললে, বলতেন কোনো সমস্যা নেই। বই আমার কাছে আছে। এভাবে তিনি বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা ৩৭ লাখ টাকা বইয়ে জমা না করে আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যান।

এদিকে গ্রাহকদের পাশ বই এর হদিস না পাওয়ায় কিস্তির কার কত টাকা বাকী বা জমা আছে তার কোনো হিসাব দেখাতে পারছেন না গ্রাহকরা। ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের চাপ দিচ্ছে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে। বাধ্য হয়ে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত কিস্তির টাকা।

শার্শার নারায়ণপুর গ্রামের সমিতির সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি যে ২০ হাজার টাকা কিস্তি জমা দিয়েছি সে টাকা অফিসে জমা না দিয়ে আরিফুজ্জামান আত্মসাৎ করেছে।

শার্শার সদরের একরামুল ইসলাম জানান, আমার কাছ থেকে আরিফুজ্জামান কিস্তির ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা দেয়নি। পরে আমাকে আবারও ২০ হাজার টাকা জমা দিতে হয়েছে।

শার্শার স্বরুপদাহ গ্রামের সমিতির সদস্য রাফসান হাসান বলেন, আমি সঞ্চয়ের ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছি বইতে। এখন অফিস থেকে বলছে কোনো টাকাই জমা হয়নি। বইও আমার কাছে নেই। আমাকে আবার টাকা জমা দিতে বলছে। এ রকম কয়েকশ গ্রাহক আরিফুজ্জামানের কাছে টাকা জমা দিয়ে পথে পথে ঘুরছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ আগের শাখা ম্যানেজার আশরাফুল আলম এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তবে আশরাফুল আলম এ ঘটনার দায় নিতে রাজি নয়।

তিনি বলেন, কেউ আমার দায়িত্ব পালনের সময় এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে বিষয়টি তাৎক্ষণিক ধরা পড়তো।

আরো পড়ুন: ১৫ বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেলেন মা-বাবা

শার্শা ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের’ বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক সালমা খাতুন জানান, তৎকালিন শাখা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আশরাফুল আলম। তিনি এ ঘটনার পর অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গেছেন। আমি এখানে যোগদান করার পর খাতাপত্র দেখে জানতে পারি গ্রাহকদের জমা ও কিস্তির ৩৭ লাখ টাকার কোনো হদিস নেই।

বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর শাখার মাঠ পরিদর্শক আরিফুজ্জামানকে হেড অফিসে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে যোগদান না করে পালিয়ে গেছেন। পরে ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় ফৌজদারী কার্যবিধি আইনে আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটি যশোর সিআইডি অফিসে তদন্তাধীন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন, শার্শা ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের’ এ ধরনের একটি ঘটনা আমি শুনেছি। টাকা আত্মসাতকারীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে জেনেছি।

‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের’ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন। যা সিআইডি তদন্ত করছেন। তদন্তের স্বার্থে এখন কোনো তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

এসি/ আই.কে.জে/




পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক মাঠ পরিদর্শক

খবরটি শেয়ার করুন